Home » বড় গল্প » চক্রবুহ্য (দ্বিতীয় পর্ব)

চক্রবুহ্য (দ্বিতীয় পর্ব)

।। চার ।।

এরপর বেশ কয়েকমাস পার হয়ে গেছে। রত্নাকর এখন সব কাজ দায়িত্ব নিয়ে নিজে করে নিতে পারে। কারুর সাহায্য নিতে হয় না। কনিকাদি মাঝে মাঝে অফিসের গোপন খবরাখবর দিয়ে যায়। রতন এতদিনে বুঝেছে যে কনিকাদিকে এড়ানোর চেয়ে ওর কথা শুনে নেওয়াই সহজ ব্যাপার। তাতে লাভ বৈ ক্ষতি নেই। কিছু না-হোক বিনা পরিশ্রমে অফিসের নানান খবর পাওয়া যায়। তাছাড়া, ওনাকে চটালে হয়ত রতনের নামে অন্যকে কি বানিয়ে বলে আসবে কে জানে।

এরমধ্যে মল্লিকা প্রোমোশন পেয়ে অন্য দায়িত্বে চলে গেলেও একই জায়গায় বসে এবং মাঝে মাঝে রতনের সাথে একসাথে বাড়ি ফেরে। এই খবরটা গোপনীয়তার মাত্রা ছাড়িয়ে এখন সবাই জানে। সেদিন একজন বলল, ‘কি মল্লিকা আজও বেরোতে দেরী হবে নাকি তোমার?’ ‘হ্যাঁ, অনেক কাজ বাকি আছে এখনো।’ মল্লিকা ফাইল থেকে মাথা না-তুলেই জবাব দিল। লোকটা বলল, ‘মনে হচ্ছে রত্নাকরেরও আজ দেরী হবে বেরোতে। ওই তোমাকে লিফট দিয়ে দেবে।’ গা-জ্বালা করানো টিটকিরি, অকারণ; তবু লোকে বলে। লোকটা বলে বের হয়ে চলে গেল। কারুর দিকে তাকালো না। কিন্তু অন্য দুজনে একসাথে তাকালো লোকটার দিকে; এবং তারপরে ওদের নিজেদের মধ্যে চোখাচোখি হল। দুজনের মাথা নেমে গেল নিজেদের ফাইলের দিকে।

রতন আড় চোখে দেখল, মল্লিকা অস্বস্তিতে এটা-ওটা নাড়ছে। রতন মাথা তুলে বলল, ‘এরা পারেও বটে।’ ‘রত্নাকর, তুমিও তো কিছু বললে না।’ ‘কি বলতে পাড়ি? তাছাড়া, এদের পাত্তা না-দেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।’

মল্লিকা কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে গেল। নিজের টেবিল গুছিয়ে বলল, ‘মুডটা খারাপ করে দিল। আজ আর কাজ হবে না। কাল করব।’ ‘চলো, আজ আমিও উঠি।’ ‘আবার যাবে আমার সাথে?’ ‘আমার না-যাওয়ায় কি ওদের এসব বলা থামবে?’ মল্লিকা কিছু একটা ভাবল। তারপরে বলল, ‘চলো, তাহলে।’

অফিস থেকে বের হয়ে দেখল রাস্তায় ভয়ঙ্কর ট্র্যাফিক জ্যাম। বুঝল, আজ এখানে ট্যাক্সি পাওয়া যাবে না। রতন জিজ্ঞেস করল, ‘কি তাহলে?’ ‘হাঁটা যাক। আর কি?’ রতন আর মল্লিকা ফুটপাথ ধরে হাঁটা শুরু করল। ট্রেনে বা বাসে কোন পত্রিকা পড়ে বা জানালার দিকে তাকিয়ে থেকে, সহযাত্রীর সাথে কথা না-বলে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু চুপ করে পাশাপাশি হাঁটলে একটা অস্বস্তি বোধ হয়। তাই হয়ত মল্লিকা জিজ্ঞেস করল, ‘এখন বাড়ি গিয়ে কি করবে?’ ‘কি আর করব? বাড়ি পৌঁছাতে আজ রাত হয়ে যাবে, কোন এক হোটেলে কিছু খেয়ে বাড়ি গিয়ে শুয়ে পড়ব।’ ‘তুমি কি একা থাকো?’ ‘আমি একাই।’ রত্নাকরের অজান্তে একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ল; সেটা মল্লিকার নজর এড়ালো না। মল্লিকা জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার বাড়ি তো উত্তরবঙ্গে কোথাও শুনেছি।’ ‘ছিল একসময়ে। সেসব বিক্রি-বাটা করে এখন আর সেসব কিছু নেই।’ ‘তোমার বাবা-মা, ভাইবোন?’ ‘ভাইবোন কেউ ছিল না। আর বাবা-মা দুজনেই মারা গেছেন।’ মল্লিকা হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ল। রতন জিজ্ঞেস করল, ‘কি হল?’ মল্লিকা রতনের মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়েছিল। নিজেকে সংযত করে বলল, ‘এই ভিড় মনে হচ্ছে অনেক দূর পর্যন্ত। চলো, কোথাও কিছু খেয়ে নেওয়া যাক।’ ‘আমার এসবে অভ্যাস আছে। ও নিয়ে ভেবো না।’ ‘কেন? তোমাকে নিয়ে ভাবার মত কেউ আছে নাকি? তার কথা তো বললে না।’ শুনে রতন একটু অস্বস্তিতে পড়ল। মনে হল, সত্যি তো, কেউ থেকেও নাই। তাকে খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিষ্ফল। তাহলে, তার অস্তিত্ব স্বীকার না-করা কি অন্যায় হবে? রতন চুপ করে কিছু ভাবছে দেখে মল্লিকা আবার বলল, ‘কি হল? তুমি মাঝে মাঝে কি ভাবো বলতো? আমি কিছু বাজে কথা বললাম না তো?’ রতন তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘এখানে খাবে?’ ‘না সামনের মোড়ে দেখি ভালো কিছু চোখে পড়ে নাকি?’ আবার চলা শুরু করল। মোড়ের মাথায় তেমন কিছু চোখে না-পরায় অনেকটা হাঁটতে হাঁটতে একটা রেস্টুরেন্ট চোখে পড়ল। দুজনে সেখানে ঢুকে কোনার দিকের একটা টেবিলে বসল। চেয়ারে বসে রতন বলল, ‘খাওয়ার প্রস্তাবটা দিয়ে ভালোই করেছিলে। হাঁটতে হাঁটতে খিদে পেয়ে গিয়েছিল।’

খাবার অর্ডার দেওয়ার পরে মল্লিকা রুমাল বের করে মুখটা একটু মুছে বলল, ‘আমার যে কি খারাপ লাগছে যে বলার নেই।’ ‘কেন?’ ‘কতদিন আমাকে পৌঁছে দিয়েছ রাতে অথচ একবারও তোমাকে খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করি নি। আসলে ভাবতাম, এমনিতেই দেরী হয়ে গেছে তার উপর তার দেরী করানো উচিৎ হবে না। ছিঃ। এত খারাপ লাগছে।’ ‘ধরো, দুই-একদিন নাহয় আমাকে খাওয়ালে। বাকি দিনগুলোতে তো আমাকে নিজেকেই ব্যবস্থা করে নিতে হয়। তাই ও নিয়ে আর মন খারাপ করো না।’ ‘তোমার আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই?’ ‘আছে। তবে এখন আর সেরকম যোগাযোগ নেই।’ ‘কোন গার্ল-ফ্রেন্ড?’ রতন টেবিল থেকে জলের গ্লাসটা তুলে কয়েক ঢোক জল খেয়ে গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রেখে বলল, ‘হ্যাঁ বলার থেকে, না বলাটাই বেশী সত্যি হবে এখন।’ ‘সরি, তোমাকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার জন্যে।’

ওয়েটার তখন টেবিলে খাবার দিয়ে গেল। দুজনেই চুপচাপ। সামনে যদিও খাবার আছে, তবু এত কথার পরে নিস্তব্ধতা বড়ই অস্বস্তিকর। দু-এক চামচ মুখে দিয়ে মল্লিকা জিজ্ঞেস করল, ‘এই অভিমান পর্ব কতদিনের?’ রতন বলল, ‘অভিমান না। ছোটবেলায় ভীমপুরে একজন ছিল। উঠ ছুড়ি তোর বিহা লেগেছে-র মত একদিন ওর বাড়ির লোক ওকে বিয়ে দিয়ে দিল আর সেও উধাও হয়ে গেল। এই কয়েকমাস আগে তার সাথে হঠাৎ দেখা। জানলাম বিয়ে হয় নি। তারপরে কয়েকদিন আমার বাড়িতে ছিল। একদিন একটা ঘটনায় সে চলে গেল। এখন তার আর কোন খোঁজ জানি না।’ মল্লিকা জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি ওর ঠিকানা জানো না? কোন খোঁজ নাও নি?’ ‘যে ঠিকানাটা জানতাম, সেখানে গিয়েছি কয়েকবার। সেখানে কেউ থাকে না। ফ্ল্যাটটা তালা বন্ধ থাকে।’ মল্লিকা আর কোন কথা বলল না। খাবারের প্লেটের দিকে চোখ নামিয়ে নিল। কিছুক্ষণ দুজনে আবার চুপচাপ।

এবার রতন জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার বাড়িতে কে কে আছে?’ ‘মা আর এক বোন, কলেজে যাবে এবার।’ ‘আর?’ ‘আর কি?’ ‘বাঃ, আমার সব জেনে নিলে আর নিজেরটা চেপে গেলে।’ ‘ওঃ, না। তোমারই মত। ছিল একজন। এখন আর নেই।’ এই বলে মল্লিকা খাওয়াতে মন দিল। কিছুক্ষণ পরে টের পেল রতন কাঁটা-চামচ নামিয়ে হাঁ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। জিজ্ঞেস করল, ‘কি হল?’ ‘আর কিছু বলবে না?’ মল্লিকা বুঝল রতন কি জিজ্ঞেস করতে চাইছে। বলল, ‘আমাদের পরিবার অনেকটা আমার উপর নির্ভর করে। বাবা নেই। বুঝতেই পারছ। একদিন বুঝলাম সঞ্জীব চায় না যে বিয়ের পরে আমি সেই দায়িত্ব টেনে চলি। ওকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। যখন দেখলাম ওর স্টিরিও টাইপ মনোভাব থেকে ও সরবে না, বুঝলাম এতেই আমাদের দুজনের শান্তি। ব্যাস, তারপরে এখন আমি তোমার সাথে এখানে বসে খাচ্ছি আর গল্প করছি।’

রতন কাটা-চামচ তুলে খেতে শুরু করে দিল। খাওয়া শেষ করে রেস্টুরেন্টের বিল মিটিয়ে দুজনে বের হয়ে গেল। ভিড় ততক্ষণে অনেক কমে গেছে। একটা ট্যাক্সি পেয়ে তাতে চড়ে বসল। মল্লিকা বলল, ‘চলো, আজ আমাদের বাড়িতে।’ ‘আজ? এখন? তোমাদের অসুবিধে হবে।’ ‘অসুবিধে হলে বলতাম না।’ রতন আর কিছু বলল না। মল্লিকা ওর বাড়ির সামনে এসে ট্যাক্সিকে থামাতে বলল। ট্যাক্সি থেকে নেমে নিজেই চাবি দিয়ে দরজা খুলল। রতন মল্লিকার পেছনে পেছনে ওর বাড়িতে ঢুকল।

মল্লিকা ওর মার সাথে আলাপ করিয়ে দিল। রতনের মনে হল মহিলার মধ্যে একটা সম্ভ্রান্তের ছাপ এখনো লেগে আছে। উনি বললেন, ‘শুনেছি ওর দেরী হলে তুমি ওকে পৌঁছে দিয়ে যাও। তো বাড়িতে আসো না কেন? তোমার কথা মল্লিকা খুব বলে। ভালো লাগল আজ এলে।’

এমন সময় মল্লিকার ছোট বোন এসে দাঁড়াল। মল্লিকার মা বললেন, ‘বসো। তোমরা গল্প কর।’ এই বলে উনি চলে গেলেন। রতন দেখল মল্লিকার বোন দেখতে একদম মল্লিকার মত। মল্লিকা বলল, ‘ওর নাম জুঁই, আমার বোন। আর এই হল রত্নাকর।’ ‘আপনার কথা দিদি খুব বলে। বসুন।’ রতন সোফায় বসল। জুঁই এসে ওর পাশে বসল। ভাবখানা এমন যে কবেকার পরিচিত, শুধু অনেকদিন বাদে দেখা – এই যা। বলল, ‘দিদি বলে আপনি নাকি খুব স্মার্ট। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই সব কাজ বুঝে গেছেন। এর আগে নাকি কেউ এত তাড়াতাড়ি এসব করতে পারে নি। দিদিরও আপনার থেকে অনেক বেশী সময় লেগেছিল।’ মল্লিকা ওদিক থেকে বলল, ‘জুঁই, তুই একটু চুপ করবি?’

কারুর বাড়িতে প্রথম ঢুকেই এইরকম কথাবার্তা শুনে রতন একটু হতভম্ব। জুঁইয়ের কথায় রতন আশ্চর্য হয়ে জুঁইয়ের দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনছিল। মল্লিকার ধমক শুনে মল্লিকার দিকে তাকালো। দেখল লজ্জায় আর অস্বস্তিতে মল্লিকার মুখটা একটু লাল হয়ে গেছে। জুঁই বলল, ‘রোজ রাতে খেতে বসে অফিসের কথা উঠলেই বলে রত্নাকর আজ এই করল, রত্নাকর আজ এই বলল। বুঝলেন তো আমার অবস্থা। তারে আমি চোখে দেখিনি, তার অনেক গল্প শুনেছি। গল্প শুনে তার আমি একটা আন্দাজ করে ফেলেছি।’ রতন জিজ্ঞেস করল, ‘তার কতটা মিলল?’ ‘অনেকটা।’ ‘জুঁই তুই যাবি এখান থেকে?’ মল্লিকা একটু রেগেই বলল ওকে। জুঁই গলার স্বরটা নামিয়ে কানের কাছে মুখ এনে ঘাড় একটু বেকিয়ে আর একদিকের ভ্রু টেনে রতনকে বলল, ‘আরও অনেক কথা বলে। পরে বলব।’ এই বলে যেমন করে ঝাঁপিয়ে এসে বসে ছিল সেরকমই তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বলল, ‘নে তুই গল্প কর। আমি চললাম।’ জুঁই চলে গেল।

‘উঃ! জুঁইটাকে নিয়ে আর পারলাম না।’ মল্লিকা বলল, ‘ওর কথা কিছু বিশ্বাস কোরো না।’

রতন এতক্ষণ বেশ মজা পাচ্ছিল। সেটার রেশ টেনে বলল, ‘আর মাসিমার কথাগুলো?’ ‘মাও এর মধ্যে সব বলে দিয়েছে?’ মল্লিকা চোখ দুটো বুজে ফেলল। ওর গাল দুটো আরও লাল হয়ে গেছে। ‘না, মাসিমা তেমন কিছু বলেন নি। তবে উনি যেখানে শেষ করলেন, জুঁই সেখান থেকে শুরু করল। এই আর কি?’ মল্লিকা চোখ দুটো খুলল তবে অন্য দিকে তাকিয়ে বসে থাকল। রতন বলল, ‘জুঁইটা ভারী মিষ্টি মেয়ে।’ ‘এ বছর কলেজে যাবে, একটুও যদি ম্যাচুওরিটি এসে থাকে ওর।’ ‘কই? আমি তো ওর মধ্যে ইম-ম্যাচুওরিটির কিছু দেখলাম না।’ ‘হুঃ! চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা।’ মল্লিকা ফিস-ফিস করে বললেও রতন পরিষ্কার শুনতে পারল।

কথা ঘোরানোর জন্যে রতন বলল, ‘জানো, আগে তোমার নাম নিয়ে কোনদিন কিছু ভাবি নি। তোমার বোনের নামটা শুনে তোমার নামটার মধ্যে যে একটা মাধুর্য আছে বেশ বুঝতে পারছি। দুজনের বেশ সুন্দর ফুলের নাম।’ এমন সময় মল্লিকার মা চা নিয়ে এলেন সেখানে। রতন জিজ্ঞেস করল, ‘মাসিমা, আপনার মেয়েদের নামগুলো কে রেখেছিল?’ ‘ওদের বাবা।’ দুই কাপ চা আর বিস্কুটের প্লেট টেবিলের উপরে নামিয়ে রেখে উনি চলে গেলেন। মল্লিকা চায়ের কাপটা এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘নাও চা খাও আর বাজে কথা ছাড়ো।’

চায়ে চুমুক দিতে দিতে রতন চারিদিকে দেখছিল। ছোটোর মধ্যেও ঘরটা বেশ ছিমছাম করে সাজানো। বাহুল্য নেই, মার্জিত, পরিমিত এবং রুচিশীলতার ছাপ চারিদিকে। রতন বলল, ‘তোমাদের এই ঘরটা সুন্দর সাজানো। কে করে এসব?’ ‘জুঁইয়ের কাজ।’ ‘বাঃ।’ বলতে গিয়ে রতন বিষম খেয়ে জামায় গরম চা ফেলে তার ছেঁকা খেল।

মল্লিকা তাড়াতাড়ি একটা তোয়ালা দিয়ে রতনের হাত মুছে দিল। বলল, ‘সাদা শার্ট। এখুনি একটু ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে দিলে দাগটা বসবে না।’ রতনের আপত্তি স্বত্বেও জোর করে খুলতে শুরু করে দিল। মল্লিকার নরম হাতের ছোঁয়া ঘাড়ে-বুকে লাগল। রতন চুপ করে বসে সেটাই অনুভব করতে লাগল। তারপর মল্লিকা শার্টটা নিয়ে চলে গেলে অস্বস্তিতে রতন চুপ করে বসে থাকল। এক-মিনিটের মধ্যে মল্লিকা শার্টের চা লেগে যাওয়া জায়গাটা ধুয়ে নিয়ে এলো। বলল, একটু ফ্যানের সামনে ধরলেই শুকিয়ে যাবে। রতন বলল, ‘থাক আমি আজ উঠি।’ মল্লিকা হাত বাড়িয়ে শার্ট এগিয়ে দিল। রতন শার্টটা পরে নিয়ে বলল, ‘চলি।’

মল্লিকা দরজা খুলে ধরল। রতন বের হওয়ার জন্য এক পা এগিয়েছে শুনতে পেল, জুঁই ওর ঘরের ভিতর থেকে গান করছে – আজ তবে এইটুকু থাক। বাকি কথা পরে হবে।

জুতো পরার জন্য রতন মাথাটা নিচু করে ছিল। হাসি চাপতে সেটা অনেকটা সাহায্য করল রতনকে। মাথাটা নিচু করেই বের হতে হতে রতন একবার মল্লিকার দিকে তাকালো। দেখল, গালের লাল ভাবটা অনেক কম, চোখ দুটো যেন কিছু জানতে চাইছে। রতন বলল, ‘এখন আসি।’

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25