Home » প্রবন্ধ » আমার কথা – দুর্গা পুজা ২০১৮

আমার কথা – দুর্গা পুজা ২০১৮

মানুষ কত কি না করে? পাহাড়ে ওঠে, জলে ঝাঁপায়, প্রেমে পরে, রোগ হয়, শোক হয়, উদার হয়, পাগল হয়, রেগে আগুন হয়, তেতে বেগুন হয়, এমন কি পটলও তোলে, কিন্তু সংস্কার ছেড়ে যায় না। মানুষ চলে তার সংস্কার নিয়ে, তার বহুতে যা দাঁড়ায়, তা হল কৃষ্টি। সে ভালোই হোক আর মন্দ হোক।

পুরো একটা বছর পরে মেয়ে নিয়ে এসেছে বাপের বাড়ি তাঁর সব ছেলেমেয়ে নিয়ে, আর পিছনে জামাই দূর থেকে নজর রাখছে। কারণ সে নাকি বউকে চোখে হারায়। এতো বাঙালী ঘরের বর্ণনা। এ’হল বাঙালী মন। এই হল বাঙালীর দুর্গাপূজা। এ কি পূজা না সংস্কৃতি? দুর্গা বাঙালীর ঘরের মেয়ে। তাই বাঙালীর দুর্গাপূজায় ধর্মের আস্ফালনের থেকে বাঙালীরা উৎসব ও অনুষ্ঠান বেশী করে।

আমরা যারা পৃথিবীর অর্ধেকটা ঘুরে উল্টো পিঠে এসে পড়েছি, সারা বছর অন্য ভাষায় নতুন উচ্চারণ শিখে কথা বলি, মাংস পুড়িয়ে খাই, ঘরের মধ্যে জুতো পরে হাঁটি, হাফ প্যান্ট পরে পার্টিতে যাই, বেগুনকে বলি এগ প্লান্ট, মুরগীর ঝোলে আনারস দেই, তারাও সারা বছরের ক্লান্তি সরিয়ে রেখে একটা সময়ে পুরোপুরি বাঙালি হয়ে উঠি। নিজের সংস্কৃতিকে ছেড়ে থাকা যায় না। তাই করি দুর্গাপূজা। নিন্দুকে বলবে, “খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার, এই তোমাদের পৃথিবী। এর বাইরে জগত আছে, তোমরা মানো না।” তর্ক করব না। মেনে নিয়ে বলব, কয়দিনের জন্যে না হয় তাই সই। সংস্কার ছেড়ে আর মানুষ বাঁচতে পারে না। আমরা তো সাধারণ বাঙালী মাত্র।

আসুন, সবাই মিলে দুর্গাপূজা করি আর কোলাকুলি করে বলি, বছরটা সবার ভালোয় কাটুক।

ধন্যবাদান্তে,
কল্লোল নন্দী

পূজারী বোর্ডের চেয়ারম্যানের আসন থেকে।