।। উনিশ ।।
বেশ একটা খুশির মেজাজে মল্লিকার পরের কয়েকটা দিন কাটল। অফিসেও অনেকে লক্ষ্য করল সেইটে, বিশেষ করে কণিকা-দি। একদিন তো বলেই ফেললেন, ‘গত কয়েকদিন তোমাকে বেশ অন্যরকম দেখাচ্ছে। কি খবর? বিয়ে করছ নাকি?’ বলেই রত্নাকরের দিকে তাকাল।
মল্লিকা বলল, ‘সেই রকমই কিছু একটা। ভাবছি পালিয়ে বিয়ে করব। তবে ভেব না কিছু। প্ল্যান পাকা হলে তোমাকে জানিয়েই পালাব।’
কণিকা-দি একটা হাসি দিয়ে নিজের টেবিলে চলে গেলেন। তারপর মল্লিকা রত্নাকরকে বলল, ‘এর মধ্যে একদিন শম্পার বাসায় যাব।’
রত্নাকর বলল, ‘খুব ভালো কথা। তুমি গেলে ও খুবই খুশী হবে।’
‘কিন্তু আমার সাথে আরও একজন যাবে। আগে ওকে সেইটে জিজ্ঞেস করে, তরপরে বোলো।’
‘কে যাবে?’
‘সঞ্জীব।’
রত্নাকর চমকে উঠল। ‘ওর সাথে তো তোমার…’, বলেই নিজেকে সংশোধন করে বলল, ‘সেই জন্যে তোমাকে গত কয়েকদিন খুব খুশি-খুশি দেখাচ্ছে।’
‘যাঃ’, বলে মল্লিকা একটু মাথা নিচু করে নিল। তারপরে বলল, ‘ওকে জিজ্ঞেস করে আমাকে জানিও। এই শনিবার যদি ফাঁকা থাকে তাহলে অফিসের পরে সঞ্জীবকে নিয়ে ওর বাসায় যাব।’
রত্নাকর কোন উত্তর দিল না। মল্লিকার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু খুঁজতে চেষ্টা করতে লাগল। বুঝল, এর মধ্যে অনেক কিছু হয়েছে যার কিছুই ও জানে না। তবে মনে হচ্ছে, যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। রত্নাকরের কাছ থেকে কোন উত্তর না-পেয়ে মল্লিকা চোখ দুটো বড় বড় করে ভ্রু টেনে মাথাটা উপরের দিকে তুলে রত্নাকরেকে ইশারায় জিজ্ঞেস করল, কি হল? কি দেখছো? রত্নাকরের মনে হল, চোখ যখন কথা বলে তখন অনেক কিছু বলে। তার ব্যপ্তি মুখের কথার থেকে অনেক গভীর, অনেক আন্তরিক। এ অন্য ভাষা। মুখে বলে সেকথা বোঝানো যায় না। রত্নাকর চোখ ঘোরাল না। মল্লিকাও একইভাবে তাকিয়ে থাকল। দুজনের কেউ কিছু বলল না। কয়েক মুহূর্ত মাত্র; তাতেই যেন অনেক না-বলা কথা একজন বলল আর অন্যজন শুনল। তারপর রত্নাকর চুপচাপ নিজের টেবিলের দিকে চলে গেল।
সেদিন শনিবার। সঞ্জীব অফিসের কাছাকাছি অপেক্ষা করছিল। মল্লিকা অফিস থেকে বের হয়ে সঞ্জীবের সাথে হাঁটতে লাগল। যেতে যেতে বলল, ‘যার কাছে যাচ্ছি, তার সম্বন্ধে কিছু কথা তোমার জেনে রাখা ভাল।’
সঞ্জীব বলল, ‘আমিও সে কথাই জিজ্ঞেস করব বলে ভাবছিলাম।’
তারপরে মল্লিকা শম্পার ব্যাপারে যা জানে এক এক করে সব সঞ্জীবকে বলল।
সব শুনে সঞ্জীব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমাকে এত কথা কে বলল?’
‘রত্নাকর।’
সঞ্জীব দাঁড়িয়ে পড়ল। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হয়ত এইরকম কোন কারণেই জীবনানন্দ লিখেছিলেন, মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয়, প্রেম নয়, কোনো এক বোধ কাজ করে।’
সঞ্জীবের পাশে মল্লিকাও দাঁড়িয়ে পড়েছিল। কথাটা শুনে ওর বুকের ভিতরটা একটু ফাঁকা ফাঁকা মনে হল। তারপরে সঞ্জীবের হাতটা ধরে একটু টেনে বলল, ‘চলো, এবার একটা ট্যাক্সি নাও।’
ট্যাক্সি করে কিছুক্ষণের মধ্যে দুজনে শম্পার ফ্ল্যাটে পৌছাল। ফ্ল্যাটের কলিং বেল টিপতেই শম্পা দরজা খুলে দাঁড়াল।
মল্লিকা সঞ্জীবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে যাবে, শম্পা বাধা দিয়ে বলল, ‘আমাকে চেনাতে হবে না। তোমার সাথে যখন এসেছেন তখনই আমি বুঝেছি।’ তারপর দরজা থেকে একটু সরে দাঁড়িয়ে বলল, ‘নমস্কার। আসুন।’
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে মল্লিকা জিজ্ঞেস করল, ‘রত্নাকর তোমাকে কিছু বলে নি?’
‘বলেছে। তবে, না-বললেও আমি চিনতে পারতাম।’ তারপরে মল্লিকার দিকে ঘুরে আবার জিজ্ঞেস করল, ‘কি? চিনতে পারতাম না?’
মল্লিকা কিছু বলল না। সোফায় গিয়ে বসল। সঞ্জীব ওর পাশেই বসল।
শম্পা সঞ্জীবকে বলল, ‘আপনার কথা বলতে বলতে ওর চোখ ভারী হয়ে ওঠে, ঠোট ফুলে যায়। আর আজ দেখুন, তার রূপ কেমন ফুটেছে।’
মল্লিকা মাথা ঘুরিয়ে নিল। সঞ্জীব দেখল মল্লিকা একটু যেন লজ্জা পেয়েছে।
সঞ্জীব বলল, ‘প্রথম আলাপে এটা বলা ঠিক হবে কি না জানি না। তবুও বলছি। আপনি যে এতো সুন্দরী এটা কিন্তু মল্লিকা আমাকে বলে নি, আর আমিও কল্পনা করি নি।’
শম্পা বলল, ‘সৌন্দর্য বোধ সকলের একরকম হয় না। তবে একথা যে আমি এই প্রথম শুনলাম তাও নয়, এবং এটাই যে শেষবারের মত শুনছি, সেরকমও আশা করি না। তবে আপনার সৌন্দর্যবোধের জন্যে আপনাকে নিশ্চয় ধন্যবাদ জানাই।’ এই বলে মুখখানা হাসিতে ভরিয়ে দিল। মল্লিকাও হেসে উঠল।
শম্পার কথা শুনে সঞ্জীব একটু সোজা হয়ে বসল।
মল্লিকা এবার লক্ষ্য করল। আগের দিন শম্পা লাল-হলুদ-কালো একটা শাড়ি পড়েছিল। আজ ধূসর-সাদা সালোয়ার-কামিজ পরেছে। এমনিতে তেমন আহামরি কিছু নয়, তবে মনে হচ্ছে এই জামাকাপড়গুলো যেন ওর জন্যেই বানানো হয়েছিল। যেখানে যতটুকু দরকার, ঠিক ততটাই। কোথাও তার বেশী নেই; কোথাও কোন কমতিও নেই।
শম্পা ওদের উল্টো দিকে মুখোমুখি চেয়ারে বসল।
শম্পা সঞ্জীবকে, ‘আপনি এসেছেন এখানে। এতে যে আমার কি ভালো লাগছে তা সত্যি আমি বলে বোঝাতে পারব না’, বলে অনেকটা জাপানি কায়দায় মাথাটা সামনের দিকে একটু ঝুকিয়ে আবার সোজা হয়ে বসে ঘাড়টা সামান্য বাঁদিকে হেলিয়ে বসে থাকল, আর মুখে হাসি।
সঞ্জীব আগেই বুঝছে যে শম্পা গুছিয়ে কথা বলতে জানে। এবার বুঝল, ও কথা বলার ভাবভঙ্গীও জানে। এই কথাটা এক অপাপবিদ্ধ সরল বাচ্চা মেয়ের মত বলল। সঞ্জীব ভাবল, এর সবই কি অভিনয়, নাকি সত্যি মন থেকে বলল।
সঞ্জীব একটু রসিকতা করে বলল, ‘মল্লিকার কাছে আপনার এতো কথা শুনেছি যে আপনার সাথে আলাপ করার লোভ সামলাতে পারলাম না।’
শম্পা বলল, ‘এই একই কথা আমার ক্ষেত্রেও খাটে। মল্লিকাকে আমিও বলেছিলাম আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে।’
সঞ্জীব বলল, ‘এছাড়া, আপনার কাছে আমার একটা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার আছে।’
শম্পা হাসতে হাসতে বলল, ‘ওসব জিনিষ খুব ক্ষণজন্মা হয় তাই মনে পড়লেই সেসব সেরে ফেলা ভাল। তবে আমার কাছে কেন? এক কাপ চাও তো অফার করি নি এখনো অবধি।’
সঞ্জীব বলল, ‘আপনার সাথে এইটুকু কথা বলেই বুঝতে পারছি মল্লিকা কেন আপনার এত ভক্ত হয়ে পড়েছে। আমি অনেক দিনেও মল্লিকাকে যা বোঝাতে পারিনি; ও সেই নিয়ে একসময় আমার সাথে কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছিল। আপনার সাথে একদিন গল্প করেই ওর সব ধারণা বদলে গেল। জানিনা আপনি কি বলেছেন। তবে আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।’
শম্পা হি-হি করে হেসে বলল, ‘যাক, ফ্রিতে একটা কৃতজ্ঞতা পেয়ে গেলাম।’ একটু থেমে আবার বলল, ‘আমি কিছুই বলিনি। মল্লিকা বরাবর যা ছিল, এখনো তাই আছে। হয়ত আপনিই এতদিন সেটা দেখতে পান নি।’
‘আপনি আপনার বন্ধুকে সমর্থন করতে গিয়ে আমাকে দোষী সাবস্থ করছেন। এইটে কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।’
‘আমি কারুর অক্ষমতাকে তার দোষ বলে মনে করি না।’ একথা শুনে মল্লিকা এবং সঞ্জীব দুজনেই থমকে চুপ করে গেল। শম্পা মল্লিকার দিকে এক ঝলক তাকিয়ে সঞ্জীবকে বলল, ‘ও যে আপনাকে পাগলের মত ভালোবাসে সে তো আপনি আমার থেকে ভাল করে জানেন। কি? জানেন না?’
সঞ্জীব এতটা ভাবে নি। চুপ করে বসে ভাবতে থাকল। মুখের উপরে ওকে অক্ষম বলে দিল, অথচ উত্তর দেওয়ার মত কোন কথাই গুছিয়ে উঠতে পারছে না। একবার মনে হল, শম্পা হয়ত ঠিকই বলেছে। শম্পা বলল, ‘একটু বসুন। আমি চায়ের জলটা বসিয়ে আসি।’
এই বলে শম্পা উঠে ভিতরের দিকে চলে গেল। সঞ্জীব একটু একটু করে মাথা ঘুরিয়ে মল্লিকার দিকে তাকালো। দেখল মল্লিকা শম্পার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর খুশি-খুশি মুখে হাসির একটা আভা লেগে আছে। কিছুক্ষণ সেই দিকে তাকিয়ে থেকে সঞ্জীব মুখ ঘোরালো।
মল্লিকা গলাটা একটু নিচু করে জিজ্ঞেস করল, ‘কি হল?’
‘ভাবছি, তুমি শম্পাকে কি কি বলেছো।’
মল্লিকা কিছুক্ষণ কোন উত্তর দিল না। তারপরে বলল, ‘তেমন কিছুই না।’
অন্যের বাড়িতে এসে নিজেদের মধ্যে ফিসফাস করে কথা বলাটা একটু অশোভনতা। আবার চুপ করে বসে থাকতেও একটা বিরক্তি লাগে। সঞ্জীব একটু জোরে বলল, ‘আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমার এখন চা না-খেলেও চলবে।’
রান্না ঘরের ভিতর থেকে উত্তর এলো, ‘আপনার হয়ত চলবে। তবে আমার চলবে না।’
অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শম্পা একটা ট্রেতে করে চা, বিস্কুট, বাদাম, কাজু সাজিয়ে নিয়ে এলো। তিনটে কাপে চা ঢেলে প্রথমটা সঞ্জীবের দিকে এগিয়ে দিয়ে তারপর মল্লিকাকে দিল। শেষে নিজে একটা কাপ নিয়ে শম্পা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল। বিকেলের রোদ পড়ে গেছে তখন। চায়ের কাপে কয়েক চুমুক দিয়ে শম্পা উঠে জানালার পর্দা সরিয়ে দিল। তিনজনে চা খেতে লাগল। পরন্ত বিকেলে হালকা হলুদ আলো তখন শম্পার গায়ের একধারে এসে পড়েছে। সাদা-ধুসর কাপড়ের উপরে হালকা হলুদ আলোর ছটা। শম্পার দিকে সোজাসুজি তাকাতে সঞ্জীবের একটু বাঁধো-বাঁধো লাগলেও, এইরকম একটা সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করতে পারছিল না। শম্পা সাথে দ্বিতীয়বার চোখাচোখি হওয়াতে সঞ্জীব চোখ নামিয়ে নিল।
শম্পা সঞ্জীবকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি কি এত ভাবছেন?’
‘ভাবছি, আপনি বাড়িতে সারা দিন একা একা কি করেন?’
‘খাই-দাই, ঘুমাই, বই পড়ি, নানান টুকিটাকি কাজ করি। এখন কয়েকদিন ধরে একটা বাসা খুঁজছি, এই বাসাটা ছেড়ে দিতে হবে কিছুদিন পরে। আপাতত এই নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে।’
মল্লিকা বলল, ‘তুমি বাসা খুজছ, কই বলো নি তো?’
‘আছে নাকি তোমার খোঁজে?’
‘না তবে আমাদের অফিসে বললে, কেউ না-কেউ একটা খোঁজ এনে দেবে।’
শম্পা বলল, ‘আমি তোমাদের অফিসের লোকজনদের থেকে একটু দূরেই থাকতে চাই।’
মল্লিকা কথাটা কিভাবে নিল ঠিক বোঝা গেল না। শুধু বলল, ‘ঠিক আছে। আমি নিজে যদি কোন খবর পাই, জানাব।’
সঞ্জীব জিজ্ঞেস করল, ‘রত্নাকর আসবে না?’
শম্পা বলল, ‘ওর ফিরতে সন্ধে পার হয়ে যায়। তাছাড়া আজ তো মল্লিকাকে পৌঁছে দেওয়ার লোকের প্রয়োজন নেই। হয়ত একটু দেরী করে আসবে।’
কথাটার মধ্যে যে একটা শ্লেষ আছে সেটা মল্লিকা আর সঞ্জীব দুজনেরই বুঝতে কোন অসুবিধা হল না।
সঞ্জীবের মনে হল, শম্পা হয়ত মল্লিকার সাথে রত্নাকরের বন্ধুত্বটা ভালো মনে নেয় না। আবার ভাবল, তাই যদি হয় তাহলে এত খাতিরই বা করবে কেন? শম্পার যেটুকু পরিচয় পেয়েছে, তাতে তো মনে হয় না এইরকম নিচু মন মানসিকতার এইরকম কোন প্রকাশ করে ফেলবে।
মল্লিকার মনে হল, হয়ত দুজনের মধ্যে মান-অভিমান হয়েছে। ভাবল, এবার তাহলে ওর কিছু করার সুযোগ হবে যাতে ঋণ কিছুটা শোধ করা যায়। তারপরে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করল, অফিসের পরে রত্নাকর এতক্ষণ কি করে? কোনদিন ওকে তো কিছু বলে নি। তাহলে কি…? এই ‘তাহলে কি’ ভাবনার বিস্তারটা এত তাড়াতাড়ি এত বিরাট হয়ে গেল যে মল্লিকা আর কিছুই বলতে পারল না।
সঞ্জীব বলল, ‘অফিসের পরে হয়ত বাসা খুঁজতে যায়। রাস্তায় যা ভিড় এইসময়ে!’
শম্পা ‘হুম’ বলে জানালার দিকে মুখ ঘোরালো।
মল্লিকার মাথায় তখনও ‘তাহলে কি?’ ঘুরপাক খে চলেছে। রত্নাকরের কথা যাতে আবার না-এসে পরে তাই তাড়াতাড়ি করে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কোন এলাকায় বাসা খুজছ?’
এবার শম্পা মুখ ঘোরালো। মল্লিকার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘যে কোন একটা ভালো জায়গা হলেই হবে। জায়গা নিয়ে আমার কোন বাচবিচার নেই।’
সঞ্জীবের মনের মধ্যে যে ধারণা গেঁড়ে বসে আছে, বুদ্ধি-বিবেচনা দিয়ে সেটা পুরোপুরি কিছুতেই মুছে ফেলতে পারছে না। মাঝে মধ্যেই সেটা এসে উঁকি মেরে চলে যাচ্ছে। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তারই নানান কথা মনে হচ্ছে। একসময় জিজ্ঞেস করেই বসল, ‘আপনার বাসা ভাড়া পাওয়া নিশ্চয় একটু শক্ত কাজ হয়ে পড়েছে।’
শম্পা চায়ের কাপটা নামিয়ে রেখে একটুক্ষণ চুপ করে থাকল। তারপরে বলল, ‘এইটে যে শক্ত কাজ হবে আমি তা জানি। তাই আশাহত হই না।’ এই বলে শম্পা একদৃষ্টে সোজাসুজি সঞ্জীবের দিকে তাকিয়ে থাকল। সঞ্জীবও নিজের চোখ সরাতে পারল না।
মল্লিকা কিছুক্ষণ দুজনকে দেখে বলে উঠল, ‘কি হল?’
শম্পা সঞ্জীবের দিকে তাকিয়ে একই রকম ভাবে বলল, ‘ঠিক যেমন আপনার পক্ষে একা আমার বাসায় এসে আমার সাথে দুটো গল্প করে এক কাপ চা খেয়ে যাওয়াটা একটা শক্ত কাজ হবে।’
সঞ্জীব বলল, ‘আপনি তো আশাবাদী।’
‘সবসময়।’
মল্লিকা একবার শম্পা আর একবার সঞ্জীবের দিকে দেখল, তবে কিছু বলল না।
সঞ্জীব শম্পাকে বলল, ‘সবসময় এইরকমই থাকবেন। আজ এখন উঠি।’
Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25