Home » চিঠি পত্র » শ্রুতি নাটকের আমন্ত্রণ চিঠি

শ্রুতি নাটকের আমন্ত্রণ চিঠি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখি নি আমরা কেউই। তবে সেই সম্পর্কে কিছু জানি – বই পড়েছি, সিনেমা দেখেছি। ১৯৯২ সালের ছয়ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা হয়েছিল। অনেক জায়গায় কার্ফু জারি হয়েছিল, কোথাও ১৪৪ ধারা। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে নানা দেশে লোকজন অন্যের বাড়ি পুড়িয়েছিল, মেরেছিল নিরীহ মানুষকে। রাজনীতি সেদিন আরেকবার সামাজিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তার মধ্যেও মনুষ্যত্বটা কিন্তু টিকে গিয়েছিল সেই ধ্বংসস্তূপের ভিতরে। সেই টানাপড়েন থেকে এখন আমরা অনেক দূরে। তাহলেও রেশটা থেকে গেছে আমাদের ভিতরে। একটু নাড়া দিলে কেমন যেন একটা অস্বস্তি হয় আজও। সময় কখনো থামে না। এই ফোর্থ ডাইমেনশনটা বড় হৃদয়হীন। কাউকে মানে না। এর কোন আবেগ নেই, অনুভূতিহীন একটা চলমান মাত্রা। আমাদের অনুভূতি হল বস্তুত ফিফ্‌থ ডাইমেনশন। কিছু অনুভূতির কোন এক্সপায়ারি ডেট থাকে না। নীরবতায় ডুবে যাওয়া কিছু শব্দের মত – মাঝরাতে কখনো সখনো পুরোনো ব্যথা জেগে ওঠার মত করে ফিরে আসে।

আটই ডিসেম্বর, বিকাল তিনটে – কোন মহার্ঘ সময় নয়। ওই সময়ে আমরা কয়েকজন মিলে দুটো শ্রুতি নাটক করছি। সেখানে এলে আপনার আয় বাড়বে না, চাকুরীতে উন্নতি হবে না, শেয়ার মার্কেটের ইনডেক্স একবিন্দু নড়চড় হবে না, ধনলক্ষ্মী ঘরে আসবে না, আমার এবং আপনার ভাগ্যচক্রের রাহু-কেতু বা বৃহস্পতি-মঙ্গলের স্থান একটুও বদলাবে না। তবু আমরা যাব, আপনিও আসবেন। কেন? ওই যে বললাম, এত কিছুর মধ্যেও মনুষ্যত্বটা টিকে গিয়েছিল সেই ধ্বংসস্তূপের ভিতরে। তাই।